- প্রকাশ করা হয়েছে বুধবার, 19 ফেব্রুয়ারী 2014 17:29
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশব্যাপী সকল সহিংসতাকে ব্যর্থ করে দিয়ে সাধারণ মানুষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওপর নিজেদের আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছে। তাই বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড ও আধুনিকায়ন অব্যাহত রাখতে সরকার একমাসের মধ্যেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নিজেকে নিয়োজিত করেছে। দেশের তরুন সমাজ ও তৃণমুল জনপদের কথা মাথায় রেখে সরকার বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রথমেই বলতে হয় সরকারের সেই উদ্যোগের কথা যার দ্বারা তথ্য প্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রা যাতে শুধু রাজধানী বা নগর কেন্দ্রিক না হয়ে দেশের সকল অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে তা নিশ্চিত করা যায়। সরকার দেশের ৭টি বিভাগীয় শহরে সুইচিং ও একসেস নেটওয়ার্ক চালু করতে যাচ্ছে।এই নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে দেশের আপামর জনসাধারণের কল্যাণের জন্য ই-কমার্স,ই-গভর্নেন্স, ই-সায়েন্স, ই-হেলথ, ই-কৃষি ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সমিটার, আইপি নেটওয়ার্ক, আইপি ব্যাকবোন (ওএনএস) তৈরির কাজ চলছে। দেশব্যাপী ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সুবিধা সম্প্রসারণে এ পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)।
বর্তমান কালে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ইন্টারনেট। এই ইন্টারনেট সেবার প্রসারে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় দুই বছরের মধ্যে এক হাজার ৪০০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইডথসহ দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে পটুয়াখালীতে ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরির কাজ অনেকদূর এগিয়েছে। ২০১৬ সালের শুরুতেই দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
এরই ধারাবাহিকতায় সরকার সমগ্র বাংলাদেশকে ওয়াইফাই জোনে পরিণত করার মত এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক এর মাধ্যমে।এই প্রকল্পের আওতায় সারা বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌছে যাবে টেলিটকের টুজি এবং ৩.৫ জি নেটওয়ার্ক। আশা করা যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ খাতের ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্তের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের ১৬ কোটি মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের পূর্ণ সুফল পাবেন। বাংলাদেশ হয়ে উঠবে আধুনিক, বিজ্ঞানমনষ্ক, মেধাভিত্তিক ও প্রযুক্তিনির্ভর এক উন্নত রাষ্ট্র।
শুধু তাই নয়, বর্তমান সরকারের উদ্যোগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই কর্মসূচির আওতায় পেনশন দেওয়া, বাজেট ব্যবস্থাপনা, কর্মকর্তাদের ছুটি ও শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম, কর্মকর্তাদের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন ও ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবস্থাপনা, পদ সৃজন ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সব কর্মকর্তা ও অন্যান্য ক্যাডারের উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের চাকরি ও ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কিত ডাটাবেজ (পিএমআইএস) এর আধুনিকায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া সব ক্যাডারের ২৯ হাজার ৫৫৮ জন কর্মকর্তা (শতকরা ৬৮ ভাগ) অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। আমাদের বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের এই কর্মযজ্ঞে চালকের ভূমিকায় থাকবে দেশের যুব সমাজ।তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি নির্ভর কাজের মাধ্যমে উপাজর্নক্ষম ও সাবলম্বী করার উদ্যোগ হিসেবে সরকার ইন্টারনেটে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে উপার্জনের সুযোগ করে দিতে ল্যাপটপ কেনার ঋণ দেবার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইয়েদ আহমেদ পলক জানান, ল্যাপটপ কিনতে শিক্ষার্থীদের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে রূপালী ব্যাংক ও পিকেএসএফ এরইমধ্যে সম্মতি দিয়েছে। এ কার্যক্রমে আরো ব্যাংক ও দাতা সংস্থাকে জড়িত করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
এভাবেই দেশ,দেশের তারুণ্য,সমাজ তথা আমাদের বাঙ্গালী জাতির সমৃদ্ধি লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আশা করাই যায় আমাদের দেশ ২০৪১ সালের আগেই বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে সম্মানের সাথে জায়গা করে নিবে।