হাওড় অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে ভাসমান জলযানে স্কুল

, বৃহস্পতিবার ১৮ জুন ২০১৫  
 হাওড় অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে ভাসমান জলযানে স্কুল

দেশের হাওড়, চর ও পানিবন্দী অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পড়ানো এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেছে সরকারের তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

সরকার ভাসমান জলযানে স্কুল (আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের ৪টি অঞ্চলে এই ভাসমান স্কুল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। স্কুলগুলো রোজ শিক্ষার্থীদের নিতে সংশ্লিষ্ট হাওড়, চর ও পানিবন্দী এলাকার নির্দিষ্ট বাড়ি বাড়ি (ঘাট) আসবে। এই স্কুলগুলো সফল হলে আগামীতে পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে।  


হাওড়, চর ও পানিবন্দী এলাকায় স্কুলের সংখ্যা যেমন অপ্রতুল, তার চেয়েও অপ্রতুল সেখানকার শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে জানাশোনা, পড়াশোনা এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ। এসব এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে এসব এলাকার শিক্ষার্থীরা দূরে কোথাও গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণাও নিতে পারে না। ফলে এসব এলাকা অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞানের ব্যপারে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছিলো।এই বৈষম্য কমাতে আইসিটি বিভাগ জলযানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানের উদ্যোগ নিয়েছে।

এই জলযানে থাকবে ইন্টারনেট ও সোলার প্যানেল সুবিধাসহ ২০টি করে ল্যাপটপ। শিক্ষার্থীরা ল্যাপটপের মাধ্যমে হাতে-কলমে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাবে। ইন্টারনেটে লগ-ইন করে ঘুরে আসতে পারবে পুরো দুনিয়া। এসবই পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় এর সঙ্গে আরও নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হবে বলে জানা গেছে। এ প্রকল্পের ভাসমান অবকাঠামো (জলযান) তৈরি করে দেবে নেদারল্যান্ডস আর আইসি‌‌‌টি বিভাগ দেবে প্রশিক্ষণ সুবিধা।

এ উপলক্ষে সরকারের কম্পিউটার কাউন্সিল নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে (ফ্লোটিং সিটি অ্যাপস) একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর ক‌উপরছে। চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “বিগত সাড়ে ৬ বছরে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হলেও এখনও ৩০ শতাংশের বেশি মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছেনি। বিস্তীর্ণ চর ও হাওড়াঞ্চলে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সেবা অপ্রতুল। তাই সেসব প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট সুবিধা এখনও অকল্পনীয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদেরকে সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। ডিজিটাল বৈষম্য দূর করে সেইসব এলাকার মানুষকেও তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। এই অপার সম্ভাবনা তৈরি করতে হলে ভাসমান আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছাড়া আর কোনও কার্যকর বিকল্প নেই।”

জানা গেছে, সিডর ও অাইলা বিধ্বস্ত এলাকা হিসেবে খ্যাত সাতক্ষীরা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের হাওড় এলাকা, হাতিয়া ও সন্দ্বীপের মতো দ্বীপ বা চরাঞ্চল এলাকাাকায় এসব স্কুল গড়ে তোলা হতে পারে। তবে এগুলো প্রস্তাবিত এলাকা। জায়গা চূড়ান্ত হলেই শুরু হবে ভাসমান নৌকা স্কুল।

^উপরে যেতে ক্লিক করুন