কাত্তরের চিঠি : ইন্দিরা গান্ধীকে মওলানা ভাসানী (ভারতের সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের কনফেডারেশন!)

প্রচলিত গুজব, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ভারতে বন্দী ছিলেন। গুজবটা যারই সৃষ্টি হোক, বা যারাই (পড়ুন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি) এর ফায়দা লুটুক, খোদ ভাসানীও কখনই এই দাবী করেননি। বরং এই প্রসঙ্গে জাতিসংঘে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে লেখা চিঠিতে লিখেছেন : আমার শেষ জীবনের শেষ কাজ স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠাকল্পে যতদূর পারি ক্ষুদ্রশক্তিতে কাজ করিতেছি। হিন্দুস্তান সরকার আমাকে কারাগারে বা অন্তরীণ রাখিয়াছে ইহা মোটেই সত্য নহে। আমি যখন যেখানে থাকি খুব গোপনে অবস্থান করি। প্রকাশ্য ঘোরাফেরা বা সাক্ষাত করা আমার পক্ষে এই অবস্থায় মোটেই সম্ভব নহে।

তবে এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় ঠিক এই চিঠি নিয়ে নয়। আর সেই প্রসঙ্গে আসার আগে মুক্তিযুদ্ধকালে ভাসানীর অবস্থান নিয়ে কিছু তথ্য অবশ্যই প্রাসঙ্গিক। স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিটি দাবি এবং কর্মসূচীর প্রতি আকণ্ঠ সমর্থন জুগিয়ে গেছেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রধান যার আরেক নাম রেড মাওলানা (সমাজতান্ত্রিক অর্থে)। যুদ্ধের শুরুতে তিনি নিরাপদ থাকলেও এপ্রিলে বাধ্য হন শরণার্থী হতে। ৪ এপ্রিল ‘কাফের ভাসানী’র খোঁজে সন্তোষে হামলা চালায় পাক বাহিনী। ভাসানী পালান এবং নানা কৌশলে পাকিদের নজর এড়িয়ে শেষ পর্যন্ত একটি কোষা নৌকায় করে ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ পৌঁছান। ১৫ এপ্রিল সীমান্ত পাড়ি দেন তিনি এবং আসামের গোয়ালপাড়া জেলার শিশুমারীতে আশ্রয় নেন। আসামের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মইনুল হক চৌধুরীর মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে তার আসার এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাহায্য চান। ১৭ এপ্রিল একটি বিমানে করে ভাসানী কলকাতায় যান। শুরুতে পার্ক সার্কাসের পার্ক স্ট্রিটের কোহিনুর প্যালেসের পাঁচ তালায় ভাসানী ও তার সহকর্মীদের থাকতে দেওয়া হয়। একই ভবনে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের পরিবারও থাকতেন।
২১ এপ্রিল চীনের চেয়ারম্যান মাও সেতুং, প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের কাছে ভাসানী চিঠি লেখেন। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত এসব চিঠিতে বাংলাদেশে ভয়াবহ গণহত্যার চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি পাকিস্তানকে সব ধরণের সহায়তা থেকে বিরত থাকার আবেদন ছিল। ৯ সেপ্টেম্বর গঠিত মুজিব নগর সরকারের ৮ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি ছিলেন ভাসানী। কলকাতায় কিছুদিন থাকার পর তিনি আসামে যাওয়ার ইচ্ছে জানান। সেখানে চর ভাসানে তার অনেক মুরীদান। আসামে যাওয়ার আগে কুচবিহারের পুন্ডিবাড়ি এবং রাণীক্ষেতে কিছুদিন থাকেন। এরপর দেরাদুনে থাকতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখান থেকে তাকে দিল্লীর অল ইন্ডিয়া ইনস্টটিউট অব মেডিকেল হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেরে ওঠার পর যমুনা নদীর তীরে এক বাংলোয় বিশ্রামে থাকেন ভাসানী। ২২ জানুয়ারি দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত এখানেই ছিলেন।
এবার আসা যাক আলোচ্য চিঠিতে। চিঠি এখানে একটি নয় দুটি। একটি ভাসানীর নিজের হাতে লেখা, অন্যটি তার ডিকটেশনে লিখেছেন ব্যক্তিগত সচিব সাইফুল ইসলাম। প্রথমটি সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এবং অন্যটি অক্টোবরের শুরুতে। দুটো চিঠিই পুরো পড়ার পর পাঠকের মনে নানা প্রশ্ন জাগতে বাধ্য। মওলানার জন্ম সিরাজগঞ্জ হলেও তারুণ্য আর যৌবন কেটেছে আসামে, তিনি ইন্দিরার অনুগ্রহে শেষ জীবনটা সেখানে কাটানোর ইচ্ছে জানাতেই পারেন। কিন্তু ভারতের সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের কনফেডারেশন গঠনের ব্যাপারটা আমার মাথায় একদমই ঢোকেনি। প্রবাসী মুজিব নগর সরকারের তরফে এমন কোন প্রস্তাবনার কথা কখনোই শোনা যায়নি। বরং স্বাধীনতার পর মওলানার ‘হক কথা’, জাসদের ‘গণমুক্তি’ কিংবা এনায়েতুল্লাহ খানের ‘হলিডে’ পত্রিকায় ভারতের কাছে দেশ বিক্রি এবং তাজউদ্দিন সরকারের ৭ দফা চুক্তির অপপ্রচার ছিল। এ প্রসঙ্গে তাজউদ্দিন বলেছিলেন ‘কেউ প্রমাণ দিতে পারলে আমি ফাঁসিতে চড়বো’ আর মুজিবের উক্তি ছিল ‘আমার দেশের মানুষ খেতে পায় না, ব্যাংকে কোন টাকা নাই, কিন্তু আপনাদের পত্রিকা বের করার খরচটা কে জোগায় এটা যদি সাহস করে বলতেন। আমরা জানি কিন্তু আপনাদের মুখে শুনতে চাই।’
দ্বিতীয় চিঠিতে এটা অবশ্য পরিষ্কার যুদ্ধাকালীন পরিকল্পনাদিতে আওয়ামী লীগ তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখায় রুষ্ট ছিলেন তিনি। পুরা ব্যাপারটায় ইন্দিরার হস্তক্ষেপের আকুতিও স্পষ্ট। প্রসঙ্গত বলতে হয় ৩০ ও ৩১ মে কলকাতার বেলেঘাটায় প্রবাসী বামপন্থীদের দু’দিনব্যাপী সম্মেলন হয় কমরেড বরদা চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে। আটটি বাম দলের এই সম্মেলনে ১ জুন ‘বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম সমন্বয় কমিটি’ গঠন করা হয় যার সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয় মওলানা ভাসানীর নাম। কিন্তু এই কমিটির কোন বৈঠক কিংবা কার্যক্রমে ভাসানী অংশ নেননি, সমর্থনও জানাননি। এবার চিঠিতে আসা যাক। সাধুভাষায় লিখিত এই চিঠিটির মূল খসড়া মওলানার নিজের।
প্রিয় শ্রীমতী ইন্দিরা দেবী,
প্রধানমন্ত্রী
আমার আন্তরিক আশীর্বাদ ও ভালবাসা জানিবেন। আমার পত্রের উত্তর মি. কাউলের মেসেজে বিস্তারিত অবগত হইয়া যারপরনাই খুশি হইলাম।
আমার বাল্যজীবনের আদর্শ ৮৯ বছর যাবত অটুট রাখিয়াছিলাম। স্বৈরাচার এহিয়া সরকারের অমানুষিক অত্যাচারে উহা লঙ্ঘন করিতে হইল। বর্তমানের রাজনীতিবিদ কংগ্রেসের কর্মীদেরকে যে যাহাই বলুক কিন্তু তাহাদের মত বিলাসিতাশূন্য জীবনযাপন ও নির্মল চরিত্র অনেকেরই নাই। আমি চিরদিন সাধারণ গৃহে সাধারণভাবে নির্জন পল্লীতে থাকিয়া দেশের সেবা করিয়াছি। কিন্তু এবারই তাহার ব্যতিক্রম হইল। গত ৭ মাস শহরে প্যালেসেস সার্কিট হাউস বাস-আহারাদি বিলাসপূর্ণ। তাই আমার মৃত্যুকাল পর্যন্ত যাহাতে বাল্যজীবনের আদর্শ বহাল থাকে তাহারই জন্য ৫ একর জমি ও সাধারণ ধরনের ৪ খানা ঘরের ব্যবস্থা করিয়া দিবেন। আমার প্রথম পুত্রের মৃত্যু হয় ধুবড়ীর গ্রামে। তাই আমার বৃদ্ধা স্ত্রীর আশা তাহার শেষ দাফন ধুবড়ীর কোন গ্রামে হয়। আমার শেষ সংগ্রাম বাংলাদেশকে স্বাধীন করা, সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ভারতের সহিত কনফেডারেশন। এই তিন কাজের সাধন ইনশাল্লাহ আমার জীবিতকালে দেখার প্রবল ইচ্ছা অন্তরে পোষন করি।
বাধা যতই আসুক, আমার আন্তরিক আশা ও বিশ্বাস আপনাদের আশীর্বাদে অবশ্যই পূর্ণ হইবে। আমার আন্তরিক আশীর্বাদ আপনার আদর্শানুযায়ী সমাজতন্ত্র শুধু ভারতে নহে এশিয়া আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হইবে। যখন দরকার মনে করেন দিল্লীতে ডাকাইলেই হাজির হইব।
আপনার বিশ্বস্ত
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
৩ অক্টোবর দেরাদুন থেকে যে চিঠিটি মওলানা লিখেছেন তার মুসাবিদা সাইফুল ইসলামের। হুবহু তা তুলে ধরা হলো :
আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নিকট হতে:
ক্যাম্প দেরাদুন
বরাবর
মিসেস ইন্দিরা গান্ধী,
প্রধানমন্ত্রী,
ভারত সরকার,
নতুন দিল্লী।

তারিখ ৩ অক্টোবর ১৯৭১
সম্মানীয়া মহাদয়া,
আপনার জন্য আমার অশেষ ভালোবাসা ও আশীর্বাদ গ্রহন করবেন। পুনরায় আপনার অমূল্য সময় হতে কয়েক মিনিট অপচয় করার কারণে আশা করি আপনি নিজ গুণে ক্ষমা করবেন।
আপনার সরকার সাধ্যমতো উত্তম চিকিৎসা করা স্বত্বেও পুরানো জ্বালাটা অনুভব করছি। কয়মাস পেরিয়ে গেছে আমি আমার স্ত্রী এবং নাতনিদের কোন সংবাদ জানি না। তাদের কোন প্রকার খবরাখবর না জানায় আমার বেদনাদায়ক অনুভব আপনি বুঝতে পারছেন- এ সম্পর্কে আমি নিশ্চিত।
বাংলাদেশের প্রথম কাতারের নেতারা যারা স্বাধীনতার জন্য কাজ করছেন তাদেরও সততা সম্পর্কে আল্লাহই জানেন। আমি পুনরায় ওয়াদা দিচ্ছি আওয়ামী লীগ যতক্ষণ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়বে আমি তাদের সমর্থন দিয়ে যাব।
সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমি যখন কলকাতায় ছিলাম তখন কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতা আপনার বরাবরে একটি লেখা টাইপ করে নিয়ে এসেছিলেন যে, অসুস্থতার দরুন আমি আপনার সাথে দেখা করতে সক্ষম হব না। চিঠির পুঙ্খানুপুঙ্খ না পড়ে কেবলমাত্র বিশ্বাসে তাতে সই দিয়েছিলাম। ওর পিছনে কি মতলব আছে আমি তা জানি না। তারা ওয়াদা করেছিলেন যে, ঐ চিঠির কপি আমাকে দেবেন। কিন্তু তারা কথা রক্ষা করেননি। আমার রাজনৈতিক জীবনে আমি ১১ বছর যাবত আসাম মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলাম এবং স্বাধীনতাউত্তরকালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করে ৮ বছর যাবত তার সভাপতি ছিলাম এবং আমি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও কৃষক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এই পদে গত ১২ বছর যাবত কাজ করে যাচ্ছি। দীর্ঘকাল এই রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতির কাজে আমার পরিচালনায় কম করে হলেও ১৬ জন সেক্রেটারি কাজ করেছেন। কিন্তু আমি গ্রামেই বাস করি। ফলে জরুরী রাজনৈতিক চাহিদা মোকাবেলা করার জন্য আমার সাদা প্যাডে বহু সই তাদেরকে দিয়েছি। এসব আমি ভালোভাবে উপলব্ধি করছি তারা বিশ্বাসঘাতকতা করে আমার সরল বিশ্বাসের বহু মওকা গ্রহণ করেছে। ফলে আমার রাজনৈতিক সহযোগিতার উপর আমার বিশ্বাস চলে গেছে। এই কারণে আমার মানবিক বেদনার জন্যই এইসব অবান্তর কথা আপনাকে লিখছি।
বিশ্বশান্তি, নিপীড়িত মানুষের মুক্তি এবং আল্লায় বিশ্বাসীসহ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আপনার মহৎ সংগ্রাম আপনি অব্যহত রাখবেন বলে আমি আশা ও বিশ্বাস করি। এবং আমি খোলামনে আপনার প্রতি সকল বিশ্বাসের স্বীকারোক্তি করছি। যদি কোন বিষয়ে আপনার সাথে দ্বিমত পোষণ করি তবে ব্যক্তিগতভাবে আপনার সাথে সাক্ষাত করে সেই পয়েন্ট আলোচনা করব। আপনার মূল্যবান উপদেশ ব্যতীত আমি কোন সিদ্ধান্ত নেব না কোন কাজ করব না। যদি আমার বিরুদ্ধে আপনার কাছে কোন রিপোর্ট পেশ হয়ে থাকে তবে বিশ্বাস করুন আমি জীবনে কাউকে ঠকাইনি। এবং শেষ জীবনেও ঠকাব না। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আমি সক্রিয়ভাবে কাজের সাথে জড়িত আছি। আপনি যদি আমাকে সক্রিয়ভাবে কাজের সাথে জড়িত রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন তবে আমি সুখী ও আনন্দিত হব। বৃদ্ধ বয়সের জন্য অনুগ্রহ করে আমাকে অবহেলা করবেন না। যদি কাজ করার এই আজীবন অভ্যাস হতে দূরে রাখা হয় তবে আশঙ্কা করছি তা আমার স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া করবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বপক্ষে জনমত সৃষ্টির জন্য কিছুদিন পূর্বে মি. ডিপি ধরের নিকট কিছু লেখা পাঠিয়ে তা ইংরেজি, বাংলায়, চীনা, আরবি, উর্দু, ফরাসি, রাশিয়ান, জার্মান প্রভৃতি ভাষায় ছাপিয়ে এ সকল দেশে বিতরণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। অনুরোধ মোতাবেক কাজ হলে আমি সুখি হব। রমজান মাসে আমি পশ্চিমবঙ্গ অথবা আসামের কোন স্থানে থাকতে চাই। পবিত্র মাস শেষে আমি আবার এখানে ফিরে আসতে চাই।
আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, বাংলাদেশে স্বাধীনতা অর্জন এবং ভারতের সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের কনফেডারেশন গঠন করার লক্ষ্যে আমি আমার সংগ্রাম অক্ষুন্ন রাখব।
এই বুড়ো বয়সে স্ত্রী ও নাতনিদেরকে নিয়ে আসামের ধুবড়ী মহকুমার যে কোন স্থানে বাস করার জন্য যদি আপনি পাঁচ একর জমিসহ ক’টি টিনের ঘরের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে এই বদান্যতার জন্য আমি আপনার নিকট কৃতজ্ঞ থাকব। আসামের আভ্যন্তরীন রাজনীতিতে আমি কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করব না। আপনার এবং আসাম সরকারের নিকট আমি এই প্রতিজ্ঞা করছি। ছয়মাস যাবত আমার থাকা, খাওয়া, পরার জন্য আপনার উপর নির্ভরশীলতার দরুন অত্যন্ত লজ্জাবোধ করছি। যদি ধুবড়ী থাকতে আমাকে অনুমতি দেয়া হয় তাহলে সরকারী তহবিল হতে আমার জন্য অর্থ খরচের দরকার পড়বে না। যেই আমাকে প্রো-চাইনিজ বলে আপনার কাছে চিহ্নিত করতে অপচেষ্টা করুন, ইনশাল্লাহ আমি ভারত ও আপনার অবাধ্য হবো না।
সর্বাধিক সম্মান সহকারে,
আপনার বিশ্বস্ত
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী

প্রায় একই বক্তব্য নিয়ে আরেকটি চিঠি সেপ্টেম্বরে লিখেছিলেন ভাসানী যা ইংরেজী অনুবাদ করে ইন্দিরাকে পাঠানো হয়েছিল। কাজটি করেছিলেন তার ব্যক্তিগত সচিব সাইফুল ইসলাম এবং মূল খসড়াও তার কাছে রয়েছে।
তথ্যসূত্র :
সাইফুল ইসলাম : স্বাধীনতা-ভাসানী-ভারত
সৈয়দ আবুল মকসুদ : মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
সিরাজউদ্দীন আহমেদ : মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
^উপরে যেতে ক্লিক করুন