- প্রসবের ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রসূতি মাকে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে বাড়িতে/স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসবোত্তর সেবা প্রদানের মাধ্যমে একই সঙ্গে মা ও শিশু মৃত্যু কমিয়ে আনা যায়।
- প্রসবের পর প্রসূতি মাকে বেশি পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার ও পানি খাওয়াতে হবে।
- প্রসূতি মা কে প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে এবং ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- প্রসবোত্তর জটিলতা প্রতিরোধে অন্ততপক্ষে মাকে ৩ বার (প্রসবোত্তর ৩দিন, ৭ দিন এবং ৬ সপ্তাহের মধ্যে) শারীরিক পরীক্ষা করাতে স্যাটেলাইট ক্লিনিক, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশুকল্যান কেন্দ্র, সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অথবা বেসরকারী ক্লিনিকে সেবা নিতে যেতে হবে।
- পরিবার পরিকল্পনা কর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী প্রসবোত্তর ৪২ দিনের মধ্যে প্রসূতি মাকে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে।
- প্রসূতি মাকে মানসিক ভাবে শান্তিতে রাখতে হবে।
প্রসব পরবর্তী সেবা :
প্রসবের পর পরই মায়ের এবং নবজাত শিশুর যতœ নেয়া এবং
প্রসবের পর ৬ সপ্তাহ (৪২দিন) পর্যন্ত মা ও শিশুর অবস্থা ফলো আপ করাকে প্রসব
পরবর্তী সেবা বলা হয়।
প্রসবের পর করণীয়
মায়ের ক্ষেত্রে
- গর্ভধারণে শরীরের যে ক্ষয় হয় তা পূরণের জন্য প্রসবের পর মাকে বেশী করে খাবার খেতে হবে । শিশুর প্রয়োজনে বুকের দুধ তৈরীর জন্য এসময় মায়ের সুষম খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
- মাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
- মাকে নিয়মিত গোসল ও পরিষ্কার কাপড় পরাতে হবে।
- এসময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রসূতি মাকে ভিটামিন ‘এ’ক্যাপসূল ও আয়রন বড়ি খেতে হবে।
- প্রসবের পর দম্পত্তিকে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহন করতে হবে।
- পরিবারের সকল সদস্যকে প্রসব পরবর্তী মায়ের সেবা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।
শিশুর ক্ষেত্রে যত্ন
- প্রসবের পর মাটিতে না রেখে শিশুকে হাতে তুলে নিতে হবে।
- শিশুর মুখের ভিতর, মুখমন্ডল ও সমস্ত শরীর পরিস্কার কাপড় দিয়ে জড়িয়ে নিতে হবে।
- জন্মের পরপরই গর্ভফুল পড়ার অপেক্ষা না করে শিশুকে শালদুধ সহ মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে । জন্মের সাথে সাথে শিশু স্তনচোষা শুরু করলে মায়ের দুধ ঠিকমত আসবে। এছাড়া প্রসবের সাথে সাথে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ালে মায়ের ফুল পড়তে এবং রক্তস্রাব দ্রুত বন্ধ হতে সাহায্য করবে।
- নবজাত শিশুকে সরিষার তেল, মধু বা চিনির সরবত জাতীয় অন্য কোন পানীয় খেতে দেয়া উচিৎ নয়।
- নাড়ী কাটার জন্য প্রথমে নবজাতকের পেট থেকে যথাক্রমে দুই আঙ্গুল, আধআঙ্গুল ও একআঙ্গুল ব্যবধানে জীবাণুমুক্ত সূতা দিয়ে পরপর তিনটি বাঁধন দিতে হবে। এরপর পরিস্কার জীবাণুমুক্ত ব্লেড দিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বাঁধনের মাঝ বরাবর কেটে দিতে হবে।
- শিশুর জন্মের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তার ওজন নিতে হবে।
- জন্মের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিশুকে বিসিজি এবং এবং ইপিআই এর ৮ টি রোগের টিকা দিতে হবে।
- প্রসব পরবর্তী বিপদ বা খারাপ লক্ষন
- ডেলিভারীর পরপর রক্ত পড়া যেটা কমার পরিবর্তে বাড়ে অথবা বড় কোন রক্তের টুকরা যাওয়া
- যোনী পথে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বা তরল বের হওয়া
- খিঁচুনী বা অজ্ঞান হওয়া
- তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা হওয়া
- স্তনে ব্যথা, ফোলা অথবা লাল হয়ে যাওয়া
চিকিৎসা বা সহায়তা প্রাপ্তির স্থানসমূহ :
- ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র
- জেলা হাসপাতাল
- সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল