ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ
রোগের লক্ষণের ধরন অনুসারে ম্যালেরিয়া কে সাধারণ/ জটিলতা বিহীন ম্যালেরিয়া ও মারাত্মক ম্যালেরিয়া হিসেবে চিহ্নিত করা যায়৷
সাধারণ/জটিলতা বিহীন ম্যালেরিয়ার লক্ষণ : ম্যালেরিয়া
জ্বর থেকে থেকে নির্দিষ্ট সময়ে আসে৷ শীতকরে, কাপুনি দেয়৷ গায়ে প্রচন্ড
ব্যথা হয়৷ এছাড়া হজমের গোলযোগ দেখা যায়। শরীর দুর্বল অনুভূত হয়। ক্লান্তি
লাগে। এ সময়ে খিদে কমে যায়৷ তাই এ সময় রোগীকে হালকা ধরনের খাদ্যই দিতে হয়৷
বিশেষ করে তরল খাদ্য৷ শক্ত বা গুরুপাক খাদ্য বর্জন করা উচিৎ৷
মারাত্মক ম্যালেরিয়ার লক্ষণ
ম্যালেরিয়া রোগের জটিল ধরন হলো মারাত্মক ম্যালেরিয়া।
জরুরী চিকিৎসা না পেলে এসব রোগীর মৃত্যু হতে পারে৷ সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া
(মারাত্মক ম্যালেরিয়া) রক্ত শূণ্যতা, কিডনি বৈকল্য, শ্বাস কষ্ট হওয়া,
জন্ডিস, খিঁচুনি, রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়৷ এক্ষেত্রে
রোগী নিজে বসতে দাঁড়াতে কিংবা হাঁটতে পারে না, বারবার বমি হয়৷ রোগী অজ্ঞান
হয়ে যেতে পারে, এমন কি মৃত্যুও হতে পারে৷
ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসা
সাধারণ/জটিলতা বিহীন ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় আগে মুখে
খাওয়ার ঔষুধ ক্লোরো কুইন ব্যবহার করা হতো৷ ক্রমে এর কার্যকারিতা কমে যাওয়ায়
বর্তমানে অন্যান্য বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করা হয়৷ যার মধ্যে বাংলাদেশে
কো-আর্টেম ব্যবহার করার নিয়ম সম্প্রতি চালু হয়েছে৷ যদিও ভাইভেক্স
ম্যালেরিয়ায় এখনো ক্লোরো কুইন কার্যকর ঔষুধ হিসেবে বাংলাদেশে স্বীকৃত৷
সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ার (মারাতœক ম্যালেরিয়া)-রোগীকে মুখে খাওয়ার ঔষধ দিয়ে
চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়৷ ফলে এদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেই নজেকশনের
মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়৷ এখনো কুইনাইন ইনজেকশন স্যালাইনের মাধ্যমে
প্রদান করাই হচ্ছে মারাত্ম কম্যালেরিয়ার মূল চিকিৎসা৷এ ধরনের রোগীর
প্রয়োজনীয় নার্সিং খুবই গুরুত্ব পূর্ণ৷
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের পদ্ধতি গুলো হচ্ছে কীটনাশকে
ডুবানো মশারি ব্যবহার করা এবং মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার বিভিন্ন উপায়
গ্রহন করা৷ মশার বংশ বৃদ্ধি রোধে বিভিন্ন মুখী সমন্বিত পদ্ধতি ব্যবহার করা৷
যেমন -
- বাড়ির বাইরে গাছের টব ও জলাধার গুলো শুকনো, পানি শূন্য রাখতে হবে৷ যেসব জিনিসে বৃষ্টির পানি জমা হয়, যেমন- পুরনো টায়ার, ডাবের খোসা ইত্যাদি বাসার আশে পাশে না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন
- টবে যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন
- ফ্রিজের নিচের ট্রেতে যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন
- ফুল দানিতে যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন
- জন স্বাস্থ্য কর্মীরা যাতে স্থির জলাধার, জলাবদ্ধ এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার করে সে ব্যাপারে পাড়ার সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।
মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে -
- জানালা-দরজায় নেট এবং খাটে মশারি ব্যবহার করুন৷
- মশা তাড়াবার জন্য মশার কয়েল, ভেপরম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
সর্বোপরি দ্রুত রোগ নির্ণয় করে কার্যকর চিকিৎসা দেওয়া। ম্যালেরিয়া জটিল হয়ে ওঠার আগেই লক্ষণ দেখা মাত্র হাসাপাতালে নিয়ে আসতে হবে।