পীর বা মাজারের উদ্দেশ্যে গরু, ছাগল মানত করা শেরেকীঃ
অনেকে বিপদে পড়লে, বিশেষ কোনো ইচ্ছা পূরণের জন্য,
রোগ মুক্তির জন্য, মা-বোনেরা ছেলে-মেয়ে হওয়ার জন্য ইত্যাদি কারণে কোনো পীর বা
মাজারের উদ্দেশ্যে গরু, ছাগল বা অন্য পশু মানত করেন। অনেকে আবার এইভাবে উপকার পেয়ে
এইগুলোর প্রতি আরো বেশি ঝুঁকে পড়েন, ইসলামের কথা আর শুনতে বা বুঝতে চান না, ঐ পীর
বা মাজার নিয়েই পড়ে থাকেন। এর পরে প্রতি বছর যাবেন, টাকা-পয়সা গরু-ছাগল দিয়ে
আসবেন, ওরস করবেন, মাজারে চাদর চড়াবেন ইত্যাদি। চলুন পীর বা মাজারের নামে পশু মানত
করা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা জেনে নিই।
আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি -
"যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে পশু জবাই করে তার উপরে আল্লাহর অভিশাপ, যে ব্যক্তি কোন বিদ’আতীকে আশ্রয় দেয় তার উপরে আল্লাহর অভিশাপ, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় তার উপরে আল্লাহর অভিশাপ, এবং যে জমিনের চিহ্ন বা সীমানা পরিবর্তন করে তার উপরে আল্লাহর অভিশাপ”।
সহীহ মুসলিম।
বিঃদ্রঃ এইরকম শিরকি মানত করে উপকার সত্যিই
হতে পারে বা ইচ্ছা পূরণ হতে পারে। কারণ, আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করেন সে কি আলাহর
প্রতি ইমান রাখে কি নাকি শিরকি কুফুরী করে দুনিয়াবী লাভের পেছনে ছুটে। কেউই যদি
মাজারে গিয়ে কিছু না পেতো তাহলে একজন মানুষও মাজারে টাকা দিতোনা, খাসি মুরগি জবাই
করতোনা। কিন্তু এই শিরকের মাধ্যমে আল্লাহ কারো কারো ইচ্ছা পূরণ করে থাকেন যাতে করে
তিনি তাকে ও অন্যদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন তারা
কি শিরক থেকে দূরে থাকে কিনা? বিষয়টা এমন যেমন যাদু করা মানুষের ক্ষতি ঠিকই করা
যায় কিন্তু যাদু কুফুরী, সুদের ব্যবসা করে লাভবান ঠিকই হওয়া যায় কিন্তু সুদ
মারাত্মক কবীরা গুনাহ। ঠিক তেমনি এইরকম শিরকি মানত করে উপকার ঠিকই পাওয়া যেতে পারে
কিন্তু তা শেরেক।
কাজ হোক বা না হোক, ইসলাম এই কাজকে হারাম
করেছে এবং শিরক বলে আখ্যায়িত করেছে কারণ এতে করে ঐ ব্যক্তির বিশ্বাস, আস্থা ও
ভক্তি আল্লাহর উপর থেকে ঐ মাজার বা পীরের উপর চলে যায় যা বড় শিরক। আর জিন্দা বা
মূর্দা কোনো পীরের বা মাজারের কোনো ক্ষমতা নেই ইচ্ছা পূরণের বা বিপদ দূর করার,
আসলে কবরে তারা নিজেরাই বিপদগ্রস্থ, তারা অন্যের উপকার করবে কি করে?
এইগুলো শিরকী আকীদা যা অজ্ঞ মুসলমানদের অন্ধ ভক্তিকে পূজি করে মাজারের খাদেম নামক একশ্রেণীর মানুষ (আসলে ওরা শয়তানের খাদেম) শেরেকীর ব্যবসা খুলে বসে আছে। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে হেফাজত করুন।