হাদীসে কুদ্সী বা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জবানে আল্লাহর বাণী
সকল প্রশংসা বিশ্ব পালনকর্তা আল্লাহর জন্য সমর্পিত। উৎপীড়ক ও সীমালংঘনকারীগণ ছাড়া আর কেউ আল্লাহর ক্রোধানলে নিপতিত হয় না। সাইয়্যেদুল মোরসালীন ও ইমামুল মোত্তাক্বীন হযরত মুহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ) এর প্রতি সালাম জ্ঞাপন করছি। আরো জ্ঞাপন করছি, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবায়ে কেরামের প্রতি।
হাদীসে কুদ্সী কি?
ইসলামী শরীয়তের চার উৎস মূলের অন্যতম হচ্ছে, ‘আল হাদীস’ পবিত্র আল কুরআনের পরেই যার স্থান। হাদীস হচ্ছে - প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ)- এর মুখনিঃসৃত নিজস্ব বাণী ও কর্ম এবং রাসূল (সাঃ) কর্তৃক সাহাবায়ে কেরাম(রাঃ) গনের বক্তব্য ও কর্মের অনুমোদন।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কথা, কাজ ও অনুমোদনের বিপরিত নয়, সাহাবায়ে কেরামের এমন সব কথা, কাজ ও অনুমোদন হাদীসের মধ্যে গণ্য।
হাদীসসমূহের মধ্যে এমন কতগুলো হাদীস রয়েছে যেগুলো আল্লাহর নবী (সাঃ) নিজ জবানে বর্ণনা করলেও তা মহান আল্লাহ তায়া’লার নামে বিবৃত হয়েছে। যেমন - ‘আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন’ কিংবা ‘মহান আল্লাহ তায়া’লা বলেন’ এভাবে উল্লেখ হয়েছে। হাদীস শাস্ত্র বিশারদ - মুহাদ্দিসদের কাছে এগুলো ‘হাদীসে কুদসী’ নামে পরিচিত।
কুদ্স শব্দের অর্থ হচ্ছে - পবিত্র (দোষ-ক্রটি থেকে)। যা আল্লাহ তায়া’লার গুনবাচক নামসমূহের একটি নাম। যেহেতু এ হাদীসগুলো সরাসরি আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত তাই এগুলোকে ‘হাদীসে কুদ্সী’ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন এ হাদীসগুলো ব্যক্ত করতেন, তখন তা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে বর্ণনা করতেন। যেমন - আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন বা বলেন, আবার কখনও বা বলতেন, ‘জিবরাঈ’লকে আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন, কিংবা ‘জিবরাঈ’ল (আঃ) আমাকে বলেছেন।
মোট কথা যেসব হাদীসের মর্ম রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘ইলহাম’ কিংবা জিবরাঈ’ল (আঃ) এর মাধ্যমে জ্ঞাত হয়ে নিজ ভাষায় প্রকাশ করেছেন, তাই ‘হাদীসে কুদ্সী’ হিসেবে সুপরিচিত।
প্রাথমিক যুগের মুহাদ্দিসগণের মতে - ‘হাদীসে কুদসী’র সংখ্যা একশ’য়ের কিছু বেশি। কিন্তু পরবর্তী কালের মুহাদ্দিসগণ প্রায় সহস্র হাদীসকে ‘হাদীসে কুদসী’ হিসাবে গণ্য করেছেন।
উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হযরতুল আ’ল্লামা মুহাম্মদ মাদানী (রহঃ)- এর বিখ্যাত ‘হাদীসে কুদসী ’ সংকলন গ্রন্থ ‘আল ইতফা-ফা-তুস্ সুন্নিয়্যাতু ফিল আহা-দীসিল কুদসিয়্যাহ’ থেকে সুনির্বাচিত প্রায় তিনশত ‘হাদীসে কুদসী’ এর বঙ্গানুবাদসহ বিষয় ভিত্তিক রূপে উপস্থাপন করা হল।
আল্লাহর একত্ববাদ সম্পর্কেঃ
ভয় ও উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্যঃ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহের মহিমাঃ
শির্ক ও তার পরিণতিঃ
আমলের উদ্দেশ্য ও বাসনাঃ
সকল প্রশংসা বিশ্ব পালনকর্তা আল্লাহর জন্য সমর্পিত। উৎপীড়ক ও সীমালংঘনকারীগণ ছাড়া আর কেউ আল্লাহর ক্রোধানলে নিপতিত হয় না। সাইয়্যেদুল মোরসালীন ও ইমামুল মোত্তাক্বীন হযরত মুহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ) এর প্রতি সালাম জ্ঞাপন করছি। আরো জ্ঞাপন করছি, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবায়ে কেরামের প্রতি।
হাদীসে কুদ্সী কি?
ইসলামী শরীয়তের চার উৎস মূলের অন্যতম হচ্ছে, ‘আল হাদীস’ পবিত্র আল কুরআনের পরেই যার স্থান। হাদীস হচ্ছে - প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ)- এর মুখনিঃসৃত নিজস্ব বাণী ও কর্ম এবং রাসূল (সাঃ) কর্তৃক সাহাবায়ে কেরাম(রাঃ) গনের বক্তব্য ও কর্মের অনুমোদন।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কথা, কাজ ও অনুমোদনের বিপরিত নয়, সাহাবায়ে কেরামের এমন সব কথা, কাজ ও অনুমোদন হাদীসের মধ্যে গণ্য।
হাদীসসমূহের মধ্যে এমন কতগুলো হাদীস রয়েছে যেগুলো আল্লাহর নবী (সাঃ) নিজ জবানে বর্ণনা করলেও তা মহান আল্লাহ তায়া’লার নামে বিবৃত হয়েছে। যেমন - ‘আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন’ কিংবা ‘মহান আল্লাহ তায়া’লা বলেন’ এভাবে উল্লেখ হয়েছে। হাদীস শাস্ত্র বিশারদ - মুহাদ্দিসদের কাছে এগুলো ‘হাদীসে কুদসী’ নামে পরিচিত।
কুদ্স শব্দের অর্থ হচ্ছে - পবিত্র (দোষ-ক্রটি থেকে)। যা আল্লাহ তায়া’লার গুনবাচক নামসমূহের একটি নাম। যেহেতু এ হাদীসগুলো সরাসরি আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত তাই এগুলোকে ‘হাদীসে কুদ্সী’ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন এ হাদীসগুলো ব্যক্ত করতেন, তখন তা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে বর্ণনা করতেন। যেমন - আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন বা বলেন, আবার কখনও বা বলতেন, ‘জিবরাঈ’লকে আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন, কিংবা ‘জিবরাঈ’ল (আঃ) আমাকে বলেছেন।
মোট কথা যেসব হাদীসের মর্ম রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘ইলহাম’ কিংবা জিবরাঈ’ল (আঃ) এর মাধ্যমে জ্ঞাত হয়ে নিজ ভাষায় প্রকাশ করেছেন, তাই ‘হাদীসে কুদ্সী’ হিসেবে সুপরিচিত।
প্রাথমিক যুগের মুহাদ্দিসগণের মতে - ‘হাদীসে কুদসী’র সংখ্যা একশ’য়ের কিছু বেশি। কিন্তু পরবর্তী কালের মুহাদ্দিসগণ প্রায় সহস্র হাদীসকে ‘হাদীসে কুদসী’ হিসাবে গণ্য করেছেন।
উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হযরতুল আ’ল্লামা মুহাম্মদ মাদানী (রহঃ)- এর বিখ্যাত ‘হাদীসে কুদসী ’ সংকলন গ্রন্থ ‘আল ইতফা-ফা-তুস্ সুন্নিয়্যাতু ফিল আহা-দীসিল কুদসিয়্যাহ’ থেকে সুনির্বাচিত প্রায় তিনশত ‘হাদীসে কুদসী’ এর বঙ্গানুবাদসহ বিষয় ভিত্তিক রূপে উপস্থাপন করা হল।
আল্লাহর একত্ববাদ সম্পর্কেঃ
১.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ
(আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই) আমার দুর্গ। তাতে যে প্রবেশ করেছে, সে আমার
শাস্তি থেকে নিরাপদ হয়েছে।”
এ হাদীসটি হযরত আনাস (রাঃ) থেকে ইবনু নাজাজ সংগ্রহ করেছেন।
২.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন - সুমহান আল্লাহ্ হযরত মূসা ইবনে ইমরানের প্রতি
প্রত্যাদেশ নাযিল করলেন যে, “তাঁর উম্মতের মধ্যে এমন কিছু সংখ্যক লোক হবে,
তারা উঁচু নিচু স্থানে উঠা নামার সময় ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া
কোন মাবুদ নেই)’ সাক্ষ্য দিতে থাকবেন, তাদের জন্য আম্বিয়ায়ে কেরামের
অনুরূপ পুরস্কার রয়েছে।”
দায়লামী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বপ্রথম লাওহে মাহফুজে যা
কিছু লিখেছেন তা হচ্ছে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম - পরম করুনাময় অসীম
দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি, নিশ্চয় আমি আল্লাহ, আমি ছাড়া আর কোন
মা’বুদ নেই। আমার কোন শরীক নেই, যে আমার বিচার-মীমাংসার প্রতি আত্নসমর্পণ
করেছে। আমার কঠিন পরীক্ষার সময় সবর এখতিয়ার করেছে এবং আমার শাসনে
সন্তুষ্ঠ রয়েছে, তাকে আমি সত্যবাদীরূপে লিখেছি; এবং কিয়ামতের দিন তাকে
সত্যবাদীদের সাথে পুনরুন্থিত করব।”
ইবনুন নাজ্জার এ হাদীসটি হযরত আলী (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৪.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেন, “আমি আল্লাহ্, আমি
ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, এ আমার উক্তি; এটা যে স্বীকার করে তাকে আমি আমার
বেহেশতে প্রবেশ করাই, আর আমি যাকে আমার বেহেশতে প্রবেশ করাই, নিশ্চয়ই সে
আমার শাস্তি থেকে নিরাপদ হয়। কুরআন আমার বাণী, আর আমার কাছ থেকে তা নাযিল
হয়েছে।”
খাতীব এ হাদীসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৫.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “নিশ্চয়ই আমি এবং জিন
ও মানব জাতি এক মহাপরিস্থিতিতে অবস্থান করছি। তাদেরকে আমি সৃষ্টি করি, আর
তারা অন্যের উপাসনা করে, তাদেরকে আমি জিবিকা দেই, আর তারা অন্যের শুকরিয়া
জ্ঞাপন করে।”
এ হাদীসটি হযরত আবুদ দারদ (রা) থেকে হাকেম ও তিরমিযী সংগ্রহ করেছেন।
৬.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমাদের প্রভূ বলেছেন, “সকলে আমাকেই ভয় করবে।
কারণ, আমিই এর যোগ্য; এতএব আমার সাথে আর কাউকেও যেন উপাস্য স্থির করা না
হয়। অনন্তর যে আমার সাথে আর কাউকেও উপাস্য স্থির করবে না, তাকে আমি ক্ষমা
করে দেয়া কর্তব্য মনে করি।”
আহমদ ও তিরমিযী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৭.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন, “আমার বান্দারা যদি
পুরোপুরি আমার অনুগত হত, তবে নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে রাতে বৃষ্টিদান করতাম,
তাদের জন্য দিনে রোদ উঠাতা এবং তাদেরকে বজ্র ধ্বনি শুনাতাম না।”
আহমদ ও হাকেম এ হাদীসটি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৮.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন, “লা-ইলাহা
ইল্লাল্লাহর সম্প্রদায়কে আমার আরশের ছায়া তলে স্থান দাও। কারণ, নিশ্চয়ই
আমি তাদেরকে ভালবাসি।”
দায়লামী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৯.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কোন মুসলমান বান্দা যখন ‘লা -ইলাহা
ইল্লাল্লাহু‘ (আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই) বলে, তখন তা আকাশসমূহ ছেদন করে
যায়, এমনকি তা আল্লাহর সম্মুখে গিয়ে পৌছে। আল্লাহ্ তখন বলেন, “স্থির
হও”, তখন এটা বলে, “আমি কিরূপে স্থির হব- আমি যার দ্বারা উচ্চারিত হয়েছি
এখনও তাকে মাফ করা হয়নি”। আল্লাহ তখন বলেন, আমি তোমাকে সে লোকের জিহ্বা
দ্বারা পরিচালিত করিনি যাকে তার আগ মুহুর্তে মাফ করে দেইনি।”
দায়লামী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
শির্ক সম্পর্কেশির্ক ও তার পরিণতিঃ
১০.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- “মহান আল্লাহ আমার প্রতি এমন কতগুলো প্রত্যাদেশ
করেছেন যা আমার কানে প্রবেশ করেছে এবং আমার হৃদয়ে বসে গেছে। আমাকে আদেশ
দেয়া হয়েছে, আমি যেন তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করি যে লোক মুশরিক
অবস্থায় প্রাণ ত্যাগ করেছে। আর যে লোক তার অবশিষ্ট সম্পদ অপরকে বিলিয়ে
দেয়, তা তার জন্য কল্যানকর। আর যে তা আকড়িয়ে রাখে, তার জন্য তা
অনিষ্টকর। আর জীবিকার সমপরিমাণ সম্পদ সঞ্চিত রাখার জন্য আল্লাহ্ কাউকেও
অভিসম্পাত করেন না।”
ইবনে জারীর এ হাদিসটি হযরত কাতাদা (রাঃ) থেকে মুরসাল হাদীস হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
১১.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয়ই তোমার উম্মতগণ
সর্বদা (তর্কচ্ছলে) বলতে থাকবে-এটা কিভাবে হল? এটা কিভাবে হল? এমনকি
‘পরিশেষে বলবে, “এ সৃষ্টিকুলকে আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন; কিন্তু আল্লাহকে
সৃষ্টি করেছে কে?”
ইমাম মুসলিম ও আবূ আওয়ানা এ হাদীসটি হযরত আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
১২.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ বলেছেন, “যাদেরকে আমার অংশী
সাব্যস্ত করা হয় আমার সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। যে লোক আমার সাথে (কোন
কিছু বা কাউকে) অংশী সাব্যস্ত করে কোন আমল করে, তাকে আমি পরিত্যাগ করি এবং
আমার সাথে সে যা শরীক করে আমি তা প্রত্যাান করি।”
মুসলিম ও ইবনে মাজা এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
১৩.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমাদের প্রভূ বলেছেন, “যে লোক আমার সৃষ্টির
অনুরূপ সৃষ্টি করেছে তার চেয়ে বড় অত্যাচারী আর কে আছে! সামর্থ্য থাকলে
তাকে একটি মশা, কিংবা একটি কণা সৃষ্টি করতে বল।”
ইবনুন নাজ্জার এ হাদিসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
১৪.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কেয়ামতের দিন জাহান্নামিদের কোন একজনকে
জিজ্ঞেস করা হবে, “তুমি কি মনে কর তোমার কাছে যদি পার্থিব কোন বস্তু থাকত
তবে তুমি মুক্তির বিনিময়ে তা দান করতে?” তখন সে বলবে “হ্যাঁ”। অনন্তর
আল্লাহ্ বলবেন, “তোমার কাছে আমি এর চেয়েও নগণ্য বস্তু চেয়েছিলাম। আদমের
পিঠে থাকাকালে তোমার কাছে চেয়েছিলাম, তুমি আমার সাথে কোন কিছু অংশী
সাব্যস্ত করবে না। তখন তুমি অংশী স্থির না করার অংগীকার করেছিলে।”
আহমদ ও শায়খাইন, আবূ আওয়ানা ও ইবনে হাব্বান হযরত আব্বাস (রাঃ) থেকে এ হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।
১৫.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেন, “হে আদম সন্তান! একটি
তোমার জন্য, আরেকটি আমার জন্য এবং আরেকটি আমার ও তোমার জন্য। অনন্তর আমার
জন্য যা রয়েছে তা এই যে, তুমি আমার উপাসনা করবে, আমার সাথে কোন কিছু অংশী
স্থির করবে না। আর যা তোমার জন্য তা এই যে, তুমি কিছু বা কোন আমল করলে
তোমাকে তার পূরো প্রতিদান দেব। আর যা কিছু আমার ও তোমার জন্য তা এই যে,
তুমি প্রার্থনা করবে আর আমি তা মঞ্জুর করবে।”
নাসায়ী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন। তবে তিনি একে দূর্বল হাদীস বলে উল্লেখ করেছেন।
শিরক না করার পুরস্কারঃ
১৬.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! যতক্ষন
পর্যন্ত তুমি আমাকে ডাকতে থাক এবং আমার আশা পোষণ করতে থাক সে পর্যন্ত আমি
তোমাকে মার্জনা করতে থাকি, তোমার যত পাপই হোক না কেন। আর আমি কোন ভয় করি
না। হে আদম সন্তান! যদি তোমার পাপরাশি আসমান পর্যন্তও পৌছে, তারপর তুমি
আমার কাছে মাফ চাও, আমি তোমাকে মাফ করে দিই এবং আমি কাউকে গ্রাহ্য করি না।”
“হে
আদম সন্তান! যদি তুমি আমার কাছে পৃথিবী পরিমাণ পাপ নিয়ে আস আর আমার কোন
অংশী স্থির না করে আমার সাথে সাক্ষাত কর, নিশ্চয়ই আমি সে পরিমাণ ক্ষমা
নিয়ে তোমার কাছে আসব।” তিরমিযী, তিবরানী ও বায়হাকী এ হাদীসটি হযরত আবূ যর
(রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
১৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেছেন- মহান মর্যাদাশালী আল্লাহ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! যে পর্যন্ত তুমি
আমার উপাসনা কর এবং আমার কাছে কামনা কর, আর আমার সাথে কোন শরীক না কর, সে
পর্যন্ত আমি তোমার সকল পাপ মার্জনা করে দেই। আর তুমি যদি আকাশসমূহ ভরা
অপরাধ ও পাপ নিয়ে আমার দিকে এগুতে থাক, আমিও অনুরূপ ক্ষমা নিয়ে তোমার
দিকে এগিয়ে আসি এবং তোমাকে ক্ষমা করে দেই। আর আমি সকল পরিণামের ঊর্দ্ধে।”
শীরাযী এ হাদীসটি হযরত আবুদ্ দারদা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
১৮.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ্ বলেন, “যে লোক কোন
ভাল কাজ করে তার জন্য ওর দশগুন এবং তার চেয়েও বেশি পুরস্কার রয়েছে। আর যে
লোক কোন খারাপ কাজ করে, এর প্রতিদান ওর সমপরিমান কিংবা আমি তা ক্ষমা করে
দেই। আর যে লোক আমার সাথে কোন কিছু শরীক না করে পৃথিবী সমান পাপ করে তারপর
আমার সাথে সাক্ষাত করে, আমি তাকে ওর সমপরিমাণ মার্জনা করে থাকি। আর আমার
দিকে এক হাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে দু’হাত অগ্রসর হই। যে লোক আমার দিকে
ঁেহটে অগ্রসর হয়, আমি দ্রুত পায়ে তার দিকে অগ্রসর হই।”
আহমদ, মুসলিম, ইবনে মাজা ও আবূ আওয়ানা এ হাদীসটি হযরত আবূ যর (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
১৯.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান মর্যাদাশীল আল্লাহ্ বলেছেন, “যে লোক জানে
যে, আমি যাঁবতীয় গুনাহ মাফের অধিকারী, তাকে আমি মাফ করে দেই। আর আমার
সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা পর্যন্ত আমি কারো কোন দোষ ধরি না।”
তিবরানী ও হাকেম এ হাদিসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
সময় ও কালকে গালি দেয়াও শিরকঃ
২০.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান মর্যাদাশীল আল্লাহ ্ বলেছেন, “আদম সন্তান
কালকে গালি দিয়ে আমাকে কষ্ট দেয়, অথচ আমিই কাল, কর্তৃত্ব আমারই হাতে,
আমিই রাত-দিনের পরিবর্তন করি।”
আহমদ, আবূ দাউদ ও শায়খাইন এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
২১.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সময়কে গালি দিও না; মহান আল্লাহ বলেছেন, “আমিই
সময়। দিন ও রাতকে আমি নতুন রূপ দান করি, আর আমিই শাসকদের উপর আরেক
শাসকদেরকে চাপিয়ে থাকি।”
বাহয়াকী এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
২২.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ্ বলেন, “আমি আমার বান্দার কাছে ঋণ
চেয়েছিলাম, কিন্তু সে আমাকে ঋণ দেয়নি। আর আমার বান্দা আমাকে গালি
দিয়েছে, অথচ সে তা জানে না। সে বলে, হায়রে সময়! হায়রে সময়! মূলত আমিই
সময়।”
রিয়া বা ছোট শির্ক সম্পর্কেআমলের উদ্দেশ্য ও বাসনাঃ
২৩.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ বলেন, “আমি তো কোন
বিচক্ষণ ব্যক্তির কথাই কবূল করি না; বরং আমি তার উদ্দেশ্য ও বাসনাই কবুল
করে থাকি। অতঃপর তার ইচ্ছা ও প্রত্যাশা যদি আল্লাহ যা ভালবাসেন ও পছন্দ
করেন তাই হয়; তবে তার উদ্দেশ্যকে আমি আমার প্রশংসা ও মর্যাদায় পরিবর্তিত
করে দেই, যদিও সে কথা সে নাও বলে থাকে।”
হামযাহা সাহমী এ হাদীসটি হযরত মুহাজির ইবনে হাবীব (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
লোক দেখানো আমলের পরিণতিঃ
২৪.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কেয়ামতের দিন কিছু লোককে বেহেশতের দিকে
যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হবে। তারা যখন বেহেশতের কাছাকাছি হবে তখন তারা
ওর সুঘ্রাণ পাবে এবং বেহেশতের প্রাসাদগুলো এবং আল্লাহ্ তাতে তার
অধিবাসীদের জন্য যা কিছু তৈরী করেছেন, তার দিকে তাকাবে। তখন ডেকে বলা হবে,
“তাদেরকে ফিরিয়ে আন, ওতে ওদের কোন অংশ নেই।” তখন তারা হতাশ হয়ে ফিরে আসবে
যেমনটি পূর্ববর্তীগণ কখনো ফিরে আসেনি। তারপর তারা বলবে-“হে আমাদের রব, যদি
তুমি আমাদেরকে তোমার প্রতিদানের বেহেশতে এবং তাতে তোমার বন্ধুদের জন্য যা
তৈরি করে রেখেছ তা দেখানোর আগেই দোযখে প্রবেশ করাতে, তবে আমাদের জন্য সহজ
হত।” আল্লাহ বলবেন, “ওরে পাপিষ্টরা, তোদের (শাস্তির) জন্য আমি এই মনস্থ
করেছি। তোমরা যখন নিরালায় থাকতে তখন বড় বড় পাপ করে আমার মুকাবিলা করতে,
আর যখন লোকদের মধ্যে আসতে তখন তাদের সাথে বিনয়ের সাথে দেখা করতে। মনে মনে
তোমরা আমাকে যেরূপ বড় মনে করতে, মানুষদেরকে তার উল্টা দেখাতে। তোমরা
মানুষকে ভয় করতে কিন্তু আমাকে আমাকে করতে না, মানুষকে বড় মনে করতে,
কিন্তু আমাকে করতে না তোমরা মানুষের জন্য নিজেকে পবিত্র সাজাতে, কিন্তু
আমার জন্য সাজাতে না এ জন্য আমি যে আজ তোমাদেরকে বেহেশতে থেকে বঞ্চিত করেছি
(তার উদ্দেশ্য ) তা দিয়ে তোমাদেরকে শাস্তি দিব।”
তিবরানী এ হাদীসটি হযরত আদী ইবনে হাতিম (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
২৫.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ তাঁর কোন এক কিতাবে অবতীর্ণ
করেছেন এবং তাঁর কোন এক নবীর প্রতি প্রত্যাদেশ পাঠিয়েছেন, ঐ সকল লোকদেরকে
বল, যারা দীন-ধর্ম ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং আমলের
উদ্দেশ্য ছাড়া জ্ঞান অর্জন করে এবং পরকালীন আমলের বিনিময়ে পৃথিবী অন্বেষণ
করে, আর ভেড়ার চামড়ার লেবাস পরিধান করে, আর তাদের হ্রদয় নেকড়ের
অন্তরের ন্যায় এবং তাদের ভাষা মধুর চেয়েও মিষ্টি এবং ধার্মিকের বেশে
দুনিয়া অর্জনে আত্ন নিয়োগ কারী এ ভন্ড প্রবঞ্চকদের বিরুদ্ধে মহান
আল্লাহ্ কঠোর সর্তকবানী করেছেন। আল্লাহ তাদের সামনে এমন কঠিন পরীক্ষা
উপস্থিত করবেন বলে কসম করেছেন যে, তা অতি চালাক লোককেও স্তম্ভিত করে তুলবে।
তাদের হৃদয় মুসাব্বর গাছের চেয়েও বেশি তিতা। আর কি আমাকেই প্রবঞ্চিত
করছে, না আমার প্রতি উপহাস করছে? এতএব আমি নিজের নামে কসম করলাম, তাদের
জন্য আমি এরূপ বিশৃঙ্খলা নাযিল করব, যাতে তাদের মধ্যেকার অতিশয় দৃঢ়মনা
জ্ঞানী ব্যক্তিও স্তম্ভিত হয়ে পড়বে।”
আবূ সাঈদ সুক্কাশ ও ইবনু ন্নাজ্জার এ হাদীসটি হযরত আবুদ্ দারদা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
২৬.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও মর্যাদাশালী আল্লাহ্ বলেছেন, আমার এরূপ
কিছু সংখ্যক বান্দা আছে, যারা মানুষকে দেখানোর জন্য ভেড়ার চামড়া পরিধান
করে। তাদের হৃদয় মুসাব্বরের কাঠের চেয়েও বেশি তিতা আর তাদের কথা মধুর
চেয়েও মিষ্টি। তারা মানুষের কাছে নিজের দীন-ধর্ম নিয়ে অহঙ্কার করে। তরা
কি আমার দেয়া আবকাশ দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়েছে? না আমার সাথে সমকক্ষতার
দুঃসাহস লাভ করতে চলেছে? কিন্তু আমি আমার সত্তার কসম করে বলছি, তাদের প্রতি
আমি এমন বিপর্যয় আনয়ন করব যে, তাতে অত্যন্ত ধৈর্য্যশীলগণও হয়রান হয়ে
পড়বে।”
ইবনু আসাকির এ হাদিসটি হয়রত আয়েশা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
আল্লাহর যিকির বা স্মরণ সম্পর্কেঃ
২৭.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- বান্দা যখন বলে, “হে আমার প্রতিপালক! হে আমার
প্রতিপালক!” আল্লাহ তখন বলেন, “হে আমার বান্দা! আমি উপস্থিত আছি। তুমি চাও,
তুমি যা চাইবে তোমাকে তাই দেয়া হবে।”
ইবনে আবিদ্- দুনইয়া ও বায়হাকী এ হাদীসটি হযরত আয়েশা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
২৮.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ বলবেন, “যে লোক কোন একদিন আমাকে
স্মরণ করেছে বা কোন এক স্থানে আমাকে ভয় করেছে, তাকে দোযখের অগ্নি থেকে বের
কর।”
তিরমিযী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
২৯.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “আমার বান্দা যখন
আমাকে নিভৃতে স্বরণ করে, আমিও তাকে নিভৃতে স্মরণ করি। আর সে যখন আমাকে কোন
মজলিসের মধ্যে স্মরণ করে, আমিও তাকে এমন এক মজলিশের মধ্যে স্মরণ করি, যা
তার সেই মজলিশের চেয়েও উত্তম- যাতে সে আমাকে স্মরণ করেছিল।”
তিবরানী এ হাদীসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩০.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- এমন কোন জাতি নেই যারা আল্লাহর যিকিরের জন্য
মজলিসে বসেছে অথচ জনৈক ঘোষক আকাশ থেকে তাদেরকে এই বলে আহবান
করেননি-“নিশ্চয়ই তোমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে এবং তোমাদের পাপসমূহ পূণ্য
দ্বারা পরিবর্তিত করে দেয়া হয়েছে।”
আসকারী এ হাদীসটি হযরত হানযালা আবসী (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩১.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! ফজর ও আসর
নামাযের পরে কিছু সময়ের জন্য আমাকে স্মরণ কর। তা হলে উভয় নামাযের মধ্য
সময়ে আমি তোমাকে সহায়তা করব।”
আবূ নুয়াঈ’ম এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩২.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মূসা (আ) বললেন, “হে আমার রব। আমি চাই, তোমার
বান্দাদের মধ্যে তুমি যাকে ভালবাস আমিও যেন তাকে ভালবাসতে পারি।” আল্লাহ্
বললেন, “(হে মূসা), তুমি যখন দেখ, আমার কোন বান্দা বেশি আমার যিকির করছে
(তখন বুঝে নিও) আমি তাকে এর সমতা দিয়েছি, আমার অনুমতিক্রমেই সে আমার যিকির
করছে এবং তাকে আমি ভালবাসি। আর যখন দেখ, আমার কোন বান্দা আমার যিকির করে
না তখন যেন আমি তাকে এ (আল্লাহর যিকির) থেকে বিরত রেখেছি এবং আমি তার উপর
রুষ্ট।”
দারু কুতনী এ হাদীসটি হযরত উমর (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩৩.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও মর্যাদাশীল আল্লাহ্ বলেছেন, “রাগাম্বিত
হওয়ার সময়ে যে আমাকে স্মরণ করে, আমিও রাগাম্বিত সময়ে তাকে স্মরণ করব
এবং যাদেরকে আমি ধ্বংস করব, তাকে তাদের মধ্যে শামিল করব না।“
এ হাদীসটি দায়লামী আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩৪.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ বলেন, “আমার যিকির যাকে এরূপভাবে
নিমগ্ন রাখে যে, সে আমার কাছে কিছু চাওয়ার সময় পায় না, তাকে আমি এমন
বস্তু দান করব, যা প্রার্থনাকারীদের প্রাপ্য বস্তুর চেয়েও উত্তম।”
ইমাম বুঝারী এ হাদীসটি জাবির (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩৫.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ বলেছেন, “যাকে আমার যিকির এভাবে
মগ্ন রাখে যে, সে আমার কাছে তার কাম্যবস্তু চওয়ারও অবসর পায় না, সে আমার
কাছে চাওয়ার আগেই আমি তাকে দিয়ে দেই।”
এ হাদীসটি আবূ নুয়াঈ’ম হযরত হুযাইফা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩৬.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সেই পবিত্র সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার জীবন।
নিশ্চয়ই মহান ও প্রতাপশালী আল্লাহ্ বেহেশতের কোন কোন গাছকে প্রত্যাদেশ
করবেন, “আমার যে সকল বান্দা আমার যিকিরের জন্য গান-বাজনা শোনা থেকে নিবৃত
রয়েছে তাদেরকে তুমি সুমিষ্ট সূর পরিবেশন কর।” তারা তখন তসবীহ ও পবিত্রতা
বর্ণনার বিনিময়ে (অর্থাৎ যিকিরের পুরস্কার হিসাবে) এরূপ সুমিষ্ট সূর শুনতে
পাবে ইতিপূর্বে যার অনুরূপ সূর কোন সৃষ্টি জীব শুনেনি।”
দায়লামী এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
আল্লাহ যাকে যিকির করতে নিষেধ করেছেনঃ
৩৭.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- আল্লাহ্ দাউদ (আ)-এর প্রতি প্রত্যাদেশ করলেন,
“জালিমদেরকে বলে দাও, তারা যেন আমাকে স্মরণ না করে। কারণ যে লোক আমায়
স্মরণ করে, আমিও তাকে স্মরণ করি। আর জালিমদেরকে স্মরণ করার অর্থ হল তাদের
প্রতি আমার অভিশাপ বর্ষণ কর।”
হাকেম এ হাদীসটি ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৩৮.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ্ বলেছেন,
“আনুগত্যের সাথে তোমরা আমাকে স্মরণ কর, তোমাদেরকে আমি ক্ষমা সহকারে স্মরণ
করব। আমাকে যে স্মরণ করে সাথে সাথে সে যদি আমার অনুগত হয়, তবে আমার জন্য
অপরিহার্য হয়ে পড়ে, আমি যেন তাকে ক্ষমার সাথে স্মরণ করি। আর যে আমাকে
স্মরণ করে- অথচ সে আমার অবাধ্যচারী, তবে আমার জন্য কর্তব্য হয়ে পড়ে, আমি
যেন তাকে ঘৃণার সাথে স্মরণ করি।”
দায়লামী এ হাদিসটি আবী হিন্দ দওয়ারী থেকে সংগ্রহ করেছেন।
আল্লাহর নিকটবর্তীঃ
৩৯.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- হযরত মূসা (আ) - এর প্রতি আল্লাহ প্রত্যাদেশ
করলেন, “হে মূসা! তুমি কি এটা চাও যে, আমি তোমার ঘরে তোমার সাথে বসবাস করি?
এই শুনে হযরত মূসা (আ) আল্লাহর উদ্দেশে সিজদায় রত হলেন অতঃপর নিবেদন
করলেন- ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমার সাথে আমার ঘরে কিভাবে বসবাস করবেন? ’
অনন্তর আল্লাহ্ বললেন, হে মুসা! তুমি কি জান না আমায় যে স্মরণ করে আমি
তার সঙ্গী হই? আর আমার বান্দা আমাকে যেখানে খোজে, সেখানেই আমাকে পায়।“
এ হাদীসটি ইবনু শাহীন হযরত জাবির (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৪০.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- হযরত মূসা (আ) বললেন, “হে আমার প্রতিপালক! আপনি
কি আমার খুব কাছাকাছি যে, আপনাকে আমি অনুচ্চরস্বরে ডাকব, না কি আমার থেকে
অনেক দূরে যে, উচ্চৈস্বরে ডাকবো? কারণ আপনার সুরের মাধূরী তো আমি অবশ্যই
অনুভব করি কিন্তু আপনাকে দেখতে পাই না, তা হলে আপনি কোথায় অবস্থান করেন?”
আল্লাহ্ এরশাদ করলেন, “আমি তোমার পেছনে, তোমার সামনে, তোমার ডানে এবং
তোমার বামে অবস্থান করি। ওহে মূসা! আমি আমার বান্দার সাথে বসে থাকি যখন সে
আমায় স্মরণ করে। সে যখন আমাকে ডাকে আমি তখন তার সাথে থাকি।”
দায়লামী এ হাদীসটি সাওবান (রা) সংগ্রহ করেছেন।
৪১.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয়ই সুমহান আল্লাহ্ বলেন, “আমি আমার
বান্দার সাথে অবস্থান করি। যতক্ষণ সে আমার যিকির করে এবং আমার যিকিরে তার
দু’ঠোট সঞ্চারিত হয়।”
আহমদ এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
উচুমনা ব্যক্তিঃ
‘মুমিনের ডাক’ আল্লাহর খুব প্রিয়ঃ
৪২.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কেয়ামতের দিন মহান ও পরাক্রমশালী প্রতিপালক
বলবেন, “আজ শীঘ্রই হাশরের ময়দানে সমবেতগণ জানতে পারবে কে উচুমনা।” বলা হল,
“হে আল্লাহ্র রাসূল! কে সে উচুমনা ব্যক্তি?” তিনি বললেন, “মসজিদ সমূহে
আল্লাহর যিকিরের মজলিসে অংশগ্রহণকারীগণ।”
এ হাদীসটি আহমদ ও আবূ ইয়ালা আবূ সাঈদ (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
কৃতজ্ঞ ও অকৃতজ্ঞঃ
৪৩.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ্ বলেছেন, “ও হে আদম সন্তান।
যতক্ষণ তুমি আমায় স্মরণ কর ততক্ষণই তুমি আমার শুকরিয়া আদায় কর। আর
যতক্ষণ তুমি আমাকে বিস্মৃত থাক ততক্ষণ তুমি আমার প্রতি নাশুকর থাক।”
ইবন্ শাহীন এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৪৪.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয় বিশ্বাসী মু’মিন বান্দা আল্লাহকে ডাকে,
অনন্তর আল্লাহ্ তা পছন্দ করেন। অতঃপর তিনি বলেন, “হে জিবরাঈ’ল আমার
(মুমিন) বান্দার এ প্রয়োজন পূরণ কর এবং তা সাময়িক রেখে পেছনে ফেল, কারণ
আমি তার কন্ঠস্বর শুনতে ভালবাসি।” আর নিশ্চয় (গুনাহগার) বান্দা আল্লাহকে
ডাকে কিন্তু আল্লাহ্ তা ঘৃণা করেন। অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেন.“হে জিবরাঈ’ল
আমার বান্দার প্রয়োজন পূরণ কর এবং তার জন্য তা জলদি কর। কারণ, আমি তার
কন্ঠস্বর শুনতে ভালবাসি না।”
ইবনু আসাকির এ হাদীসটি আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৪৫.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয়ই জিবরাঈ’ল (আ) আদমের প্রয়োজন মেটানোর
জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন। অতঃপর কোন অবিশ্বাসী বান্দা যখন দু’আ করে
তখন মহান আল্লাহ বলেন, “হে জিবরাঈল! তার প্রয়োজন পূরণ করে দাও। আমি তার
দু’আ শুনতে চাই না।” আর কোন মু’মিন বান্দা যখন দু’আ করে তখন আল্লাহ্ বলেন,
“হে জিবরাঈল! তার প্রয়োজন স্থগিত রাখ, কারণ আমি তার আহবান শুনতে পছন্দ
করি।”
ইবনুন নাজ্জার এ হাদিসটি হযরত জাবির (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৪৬.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেন, “আমার প্রতি বান্দার যে
ধারণা রয়েছে আমি তার সাথে থাকি। সে যখন আমাকে স্মরণ করে আমি তখন তার সাথেই
থাকি।” রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “আল্লাহর কসম! তোমাদের তওবা করায়
আল্লাহ্ সেরূপ আনন্দিত হন, মরুভূমিতে হারিয়ে হারিয়ে যাওয়া প্রাণী খুজে
পেলে তোমরা যেরূপ আনন্দিত হও। আমার দিকে যে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তার
দিকে এক হাত অগ্রসর হই। আমার দিকে সে এক হাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক
গজ অগ্রসর হই; আর সে যখন আমার দিকে পায়দলে অগ্রসর হয়, আমি তখন দ্রুতবেগে
তার দিকে অগ্রসর হই।”
মুসলিম এ হাদিসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৪৭.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ এক বান্দাকে দোযখে প্রবেশ
করানোর আদেশ দেবেন। সে যখন দোযখের প্রান্তদেশে উপনীত হবে, তখন পিছু ফিরে
তাকবে এবং বলবে, “আল্লাহর কসম! ‘হে প্রতিপালক! তোমার সম্পর্কে আমার কি ভাল
ধারণা ছিল না? তখন মহান প্রতাপশালী আল্লাহর বলবেন, “তাকে ফিরিয়ে আন। কারণ,
আমি আমার বান্দার ধারণার সাথে অবস্থান করি।” আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করে
দেবেন।
বায়হাকী এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৪৮.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ্ বলেছেন, “ওহে আমার বান্দা! আমার
সম্পর্কে তোমার ধারণার সাথে আমি আছি। তুমি যখন আমার আহবান কর, আমি তখন
তোমার সাথে থাকি।”
৪৯. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান
আল্লাহ বলেছেন, “আমার সম্পর্কে বান্দাদের ধারণার সাথে আমি আছি। কেউ যদি
সুধারণা পোষণ কর, তবে তার জন্য তা কল্যাণকর। আর যদি সে খারাপ ধারণা পোষণ
করে, তবে তার জন্য তা কল্যাণকর।”
তিবরানী এ হাদিসটি হযরত ওয়াসিল (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৫০.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ্ বলেন, “আমি আমার
প্রতি আমার বান্দার ধারণার সাথে আছি। আর আমাকে যখন সে স্মরণ করে, আমি তখন
তার সাথেই অবস্থান করি। সে যদি আমায় মনে মনে স্মরণ করে, আমিও তাকে মনে মনে
স্মরণ করি। সে যদি আমাকে কোন এক সম্প্রদায়ের মধ্যে স্মরণ করে, তবে আমি
তাকে ওর চেয়েও উৎকৃষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে স্মরণ করি। সে যদি আমার দিকে এক
বিঘত অগ্রসর হয়, তার দিকে আমি একহাত অগ্রসর হই। সে যদি আমার দিকে এক হাত
অগ্রসর হয়, তবে তার দিকে আমি এক গজ অগ্রসর হই। আর সে যদি আমার দিকে
পায়দলে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে আগাই।
আহমদ ও শায়খইন এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৫১.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও মর্যাদাশালী আল্লাহ্ বলেছেন, “আমার
সম্পর্কে আমার বান্দার ধারণার সাথে আমি আছি। সে যদি আমার প্রতি সুধারণা
পোষণ করে তবে তা তারই সাথে থাকবে, আর যদি সে খারাপ ধারণা পোষণ করে, তবেও তা
তারই সাথে থাকবে।
আহমদ এ হাদিসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৫২.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কোন বান্দাই শুধু তিনবার ‘হে প্রভূ’ বলে না;
বরং সুমহান আল্লাহ্ বলেন, “ও হে বান্দা! আমি উপস্থিত আছি।” অনন্তর তিনি যা
ইচ্ছে তাড়াতাড়ি করেন এবং যা ইচ্ছে বিলম্বিত করেন।
দায়লামী এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৫৩
. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রমশীল আল্লাহ্ বলেছেন, “আমার
কোন বান্দা অন্য কোন প্রিয়বস্তু দ্বারা আমার নিকট প্রিয় হয় না যে
পর্যন্ত সে আমি তার প্রতি যা ফরজ করেছি, তা আদায় না করে।”
আল্লাহর হক ও বান্দার হক সম্পর্কে
৫৪.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ্ বলেন, “আমার
বান্দা আমার অধিকার সংরক্ষণে তৎপর না হওয়া পর্যন্ত আমি আমার বান্দার কোন
অধিকার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহন করি না।”
তিবরানী এ হাদীসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
আল্লাহর দীদার সম্পর্কে
৫৫.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ্ বলেছেন, “আমার বান্দা যখন আমার
দিদারকে ভালবাসে, আমিও তার সাক্ষাত ভালবাসি। আর সে যখন আমার দিদারকে অপছন্দ
করে, আমিও তার সাক্ষাত ঘৃণা করি।”
মালেক ও বুখারী এ হাদিসটি আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৫৬.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “ওহে মূসা! তুমি কখনো
আমাকে দেখবে না। জীবিত কেউ মৃত্যুবরণ করা ছাড়া আমাকে দেখবে না। স্থলভাগের
কোন অধিবাসী দেখবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাকে নীচে নিক্ষেপ করা হয়
(অর্থাৎ তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত )। জলভাগের কোন অধিবাসীও আমাকে দেখবে
না, যে পর্যন্ত না তাকে পৃথক করা হয় (অর্থাৎ মৃত্যু হয়)। নিশ্চয়ই আমাকে
বেহেশতীগণ দেখবে, যাদের চোখ দৃৃষ্টি শুণ্য করা হবে না এং যাদের দেহ জীর্ন
হবে না।”
হাকীম ও তিরমিযী এ হাদিসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
৫৭.
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- বেহেশতীগণ যখন বেহেশতে প্রবেশ করবে, তখন সুমহান
আল্লাহ বলবেন, “তোমরা কি চাও যে, আমি তোমাদেরকে আরও বেশী কিছূ দেই?” তারা
বলবে, “ আপনি কি আমাদের মুখমন্ডলসমূহকে উজ্জল করেন নি?” আপনি কি আমাদেরকে
বেহেশতে প্রবেশ করাননি এবং দোযখ থেকে নিষ্কৃতি দেননি?” তখন আল্লাহ্ তার
হিজাব (আলোর পর্দা) খুলে দেবেন। অতঃপর তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের দিকে
দৃষ্টিপাত করা অপো অধিকতর প্রিয় কোন বস্তু দেয়া হবে না।”
তিরমিযী ও মুসলিম এ হাদীসটি সুহাইব (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।