প্রশ্নঃ নারীরা কি তালাক দিতে পারে?
উত্তরঃ উত্তর দেওয়ার আগে বলে নেই ‘তালাক’
কাকে বলে।
তালাক হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যার
মাধ্যমে স্বামী কোনো প্রকার কোর্ট/কাজী/স্বাক্ষী/লেখা-জোখা ছাড়াই শুধু মুখে
“তালাক” বা বিয়ে বাতিল করা হয় বা সম্পর্ক ছিন্ন হয় এমন কোনো কথা উচ্চারণের মাধ্যমে
স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন ও বিয়ে বাতিল করা হয়।
নারী পুরুষের তালাক দেওয়ার ক্ষমতার
মাঝে এই পার্থক্যের পেছনে অনেক হিকমাহ আছে। জ্ঞানী নারী ও পুরুষ সকলেই জানেন –
পুরুষের তুলনায় নারীরা চঞ্চলমতি – তারা খুব সহজেই কারো প্রতি খুশি হন, আবার
অল্পতেই কাউকে শত্রুভাবা শুরু করেন। তাই, তারা যদি এতো সহজেই তালাক দেওয়ার
অধিকারিণী হন তাহলে ভবিষ্যতে সংসারে এটা তাদের স্বামীর প্রতি মনোভাবের প্রতি বিরূপ
প্রভাব ফেলবে। স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হলেই খুব সহজেই সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো
কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারেন।
যাই হোক, তবে কোনো নারীর যদি সত্যিই
উপযুক্ত কারণ থাকে তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার মতো, (যেমন স্বামী ব্যভিচারী অথবা স্বামী
কর্তৃক মারধরের কারণ শারিরীক ক্ষতির আশংকা থাকে, স্বামী দুঃশ্চরিত্রের হয়ে থাকে),
তাহলে তার সুযোগ আছে “খুলা” করে তার কাছ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য।
খুলা শব্দের অর্থ হচ্ছে পৃথক হওয়া (separation)
– এটা তালাক নয়। ঐ নারী যদি পরবর্তীতে বিয়ে করতে চান তার ইদ্দত
হচ্ছে এক ঋতু (আনুমানিক এক মাস)।
খুলা করার সিস্টেমঃ
তিনি কাজী বা কোর্টের কাছে বিষয়টি
পেশ করবেন – এর পরে কাজী স্বামীকে তলব করে সত্যতা যাচাই করে দেখবেন। সত্যিই যদি
উপযুক্ত কারণ পাওয়া যায় তাহলে কোর্ট স্বামীকে আদেশ করবে তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার
জন্য। স্বামী রাজি না হলে উপযুক্ত কারণ সাপেক্ষে – কাজী বিয়ে বাতিল ঘোষণা করে দিতে
পারেন।
আর উপযুক্ত কারণ না থাকলে – কোনো
নারী যদি অহেতুক তার স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চান – কোনোভাবেই স্বামীর সাথে
থাকতে না চান – তাহলে স্বামী তার স্ত্রীর জন্য ব্যয় করা দেনমোহরের টাকা ফেরত চাইতে
পারেন। তবে উপযুক্ত কারণ ছাড়া যেমন (অবৈধ
সম্পর্কের কারণে অন্য পুরুষকে বিয়ে করার জন্য) কোনো নারী যদি তার স্বামীর কাছে
তালাক চায় (খুলা করতে চায়) তাহলে এটা মারত্মক কবীর গুনাহ এবং এটা মুনাফেক নারীদের
একটা বৈশিষ্ট্য। সহীহ হাদীসে এদের সম্পর্কে বলা হয়েছে – এরা জান্নাতের
সুগন্ধিটুকুও পাবেনা (অর্থাৎ জাহান্নামে যাবে)।