- প্রকাশ করা হয়েছে সোমবার, 01 জুন 2015 11:16

মন্ত্রিসভা গতকাল ঢাকা ও দিল্লীর মধ্যে
তিনটি চুক্তি ও সংশ্লিষ্ট দুইটি প্রটোকল-এর খসড়া অনুমোদন করেছে। আগামী
সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরকালে এগুলো
স্বাক্ষরিত হবে।
প্রধানমন্ত্র্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, খসড়াগুলোর মধ্যে একটি
হলো- ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন’ এবং ‘ব্যুরো
অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস’- এর মধ্যে মান নির্ণয় ও সাদৃশ্য যাচাইয়ে
সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি।
এই চুক্তির আওতায় উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ
একে অন্যের পণ্য ও সেবাকে মান ও নিরীক্ষা সনদ দেবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব
বলেন, দ্বিতীয়ত, নিরীক্ষণ প্রক্রিয়ায় সমন্বয় আনার লক্ষ্যে উভয় পক্ষই
একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য সামগ্রীসমূহ পরীক্ষার
জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন, এই চুক্তি দুই দেশের পারস্পরিক
ব্যবসা-বাণিজ্যকে উৎসাহিত করবে এবং এর ফলে উভয় দেশের ব্যবসায়ী
সম্প্রদায় প্রত্যক্ষ এবং ভোক্তারা পরোক্ষভাবে লাভবান হবেন।
অপর দুইটি চুক্তির খসড়ার মধ্যে রয়েছে-
কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে আগরতলার মধ্যে যাত্রীবাহী বাস চলাচল এবং ঢাকা থেকে
সিলেট ও শিলং হয়ে গৌহাটি পর্যন্ত যাত্রবাহী বাস চলাচল। মন্ত্রিসভা এই
রুটগুলোতে যাত্রীবাহী বাস চলাচল সংশ্লিষ্ট প্রটোকলগুলোও অনুমোদন করে।
অন্যদিকে, মন্ত্রিীসভা আসন্ন পবিত্র রমজান
মাসের জন্য সরকারি, আধা-সরকারি, সায়ত্ত্বশাসিত ও আধা-সায়ত্ত্বশাসিত
প্রতিষ্ঠানসমূহের অফিস সময় পরিবর্তন করেছে। রমজান মাসে নতুন সময়সূচি
অনুসারে সপ্তাহের রবি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অফিস সময় শুরু হবে সকাল
৯টায় এবং শেষ হবে বিকেল সাড়ে ৩টায়। তবে দুপুর ১টা ১৫ মিনিট থেকে পনের
মিনিটের জন্য যোহরের নামাজের বিরতি থাকবে।
ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ডাক বিভাগ,
হাসপাতাল এবং বেসরকারি খাতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নিজস্ব অফিস
সময় নির্ধারণ করবে। হাইকোর্টের অফিস এবং অধস্থন আদালতসমূহের অফিস সময়
সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারণ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক অঞ্চল (সংশোধন) বিল ২০০৫’-এর খসড়া মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে।
নতুন এ আইনটি দেশে সরকারিভাবে অন্য দেশের সরকারের সাথে (জিটুজি)
অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন সহজ করবে। নতুন আইনে,
‘জিটুজি’ ভিত্তিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বাস্তবায়নের
লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে।
বিদ্যমান বিধান অনুসারে, সিটি কর্পোরেশন,
পৌরসভা এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা
যায় না, তবে নতুন আইনে তা শিথিল করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব
বলেন, যেকোন আইটি-ভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ওই বিধান
কার্যকর হবে না।
প্রত্যেক দরিদ্র ও অতিদরিদ্র ব্যক্তি এবং
ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠিকে কর্মসূচির আওতায় আনার উদ্দেশ্যে এবং একটি কার্যকর
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রিসভা জাতীয়
সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল-এর সংশোধিত খসড়া অনুমোদন করেছে।
‘সেন্টার ফর মনিটোরিং কমিটি অন সোশ্যাল
সেফটি নেট প্রোগ্রাম’এর নির্দেশনার আলোকে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ
অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এই কৌশলটি প্রণয়ন করেছে।
নতুন কৌশলের আওতায়, শারীরিক প্রতিবন্ধী
ব্যক্তিদের প্রতি আরও বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং প্রত্যেকটি সামজিক
নিরাপত্তা বেষ্টনীতে শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরকে সুস্থ ব্যক্তিদের
তুলনায় অধিক গুরুত্ব এবং বেশি বরাদ্দ দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের
অধীনে দেশে ১৪৫টি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আর এর
মাধ্যমে জিডিপি’র ২ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যয় হয়।
বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীবর্গ, উপদেষ্টাবৃন্দ, প্রতিমন্ত্রীগণ এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।